NAJMUL SHANTO: শুরুতে উইকেট হারানোর পরে সেমির আশা ছেড়ে দেয় বাংলাদেশ! ম্যাচ হেরে ঝড় তোলা স্বীকারোক্তি ক্যাপ্টেন শান্তর

najmul Shanto on Bangladesh batting failure: পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার মত হঠাৎ করেই বাংলাদেশের কাছে সুযোগ এসেছিল সেমিফাইনালে পৌঁছনোর। সেই সুযোগ এনে দিয়েছিল আফগানিস্তানই। হতশ্রী ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে মাত্র ১১৫ রানে রশিদ খানরা আটকে যাওয়ার পর বাংলাদেশের সামনে দুটো অপশন চলে আসে।

প্রথম অপশন: ১২.১ ওভারের মধ্যে রান চেজ করে আফগানিস্তান এবং অস্ট্রেলিয়াকে ছিটকে ভারতের সঙ্গে দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমিতে কোয়ালিফাই করা। দ্বিতীয় অপশন: কোনও সমীকরণ ছাড়াই স্রেফ জিতে সম্মান রক্ষার জয় নিয়ে দেশে ফেরা।

তবে এই দুই অপশনের মধ্যে তালগোল করে দুটোর একটাও হাসিল করতে পারল না বাংলাদেশ। নির্দিষ্ট ওভারের মধ্যে তো জিততেই পারল না, পুরো ২০ ওভারের মধ্যেও এল না জয়। অসম্মানের পরাজয় নিয়ে ঢাকার বিমানে চাপছেন রিয়াদ-সাকিবরা।

কীভাবে বাংলাদেশ রান তাড়া করার সময় বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিল, তা ম্যাচ শেষের পর ক্যাপ্টেন নাজমুল হোসেন শান্ত-র কথাতেই স্পষ্ট। যিনি বলে দিয়েছেন, “প্রাথমিকভাবে আমরা চেয়েছিলাম নির্দিষ্ট ওভারের মধ্যে জিততে। অবশ্যই যদি পাওয়ার প্লেতে আমরা ভালো খেলতে পারি। ভেবেছিলাম উইকেট না হারালে আমরা সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারে ঝাঁপাতেই পারি। তবে তিনটে উইকেট (পাওয়ার প্লের মধ্যেই) হারানোর পরেই আমাদের প্ল্যানিং বদলে ফেলতে হয়। আমরা তারপর শুধু জয়ের জন্যই খেলা চালিয়ে যাই। মিডল অর্ডার ভালো সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাটিং করতে পারেনি। তাই এদিন হারতে হল।”

ঝুঁকি নিয়ে সেমিফাইনালের জন্য রান চেজ না করে নিরাপদে জয়ের লক্ষ্যে প্ল্যান বদলে ফেলায় আম-ও ছালা-ও যায় বাংলাদেশের। তৃতীয় ওভারের মধ্যেই বাংলাদেশ ২৩/৩ হয়ে যাওয়ার পর খোলসে ঢুকে যায় বাংলাদেশ। লিটন দাস একপ্রান্তে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখলেও অন্যপ্রান্তের ব্যাটাররা হতাশ করে যান।

একসময় বাংলাদেশের সেমিতে পৌঁছনোর জন্য ১৮ বলে দরকার ছিল ৪৩ রানের। মাহমুদুল্লাহ ছিলেন ক্রিজে। তবে নূর আহমেদের সেই ওভারে পাঁচটাই ডট বল খেলেন তিনি। আক্রমনাত্মক ব্যাটিংয়ের কোনও চেষ্টাই করেননি তিনি। পরে ছয় নম্বরে নেমে তাওহিদ হৃদয়-ও লিটন-সুলভ আগ্রাসী ব্যাটিং করছিলেন। তবে মাহমুদউল্লাহ, নাজমুলদের প্রচেষ্টা ছিল সতর্কতার চাদরে মোড়া। দুই প্রান্তের এই দুই ধরণের ব্যাটিংয়ের বৈসাদৃশ্য লক্ষ্য করেছেন প্রাক্তন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, “লিটনের ইনটেন্ট আর নন-স্ট্রাইকের নীরবতা দেখে বোঝা যায় পরিষ্কার কোনো বার্তা বাংলাদেশের ব্যাটিং ইউনিটের কাছে ছিল না। যদি থেকেই থাকে, সেটা এক বা দুই ওভার পরপর পরিবর্তন হয়েছে। শেষমেশ এমন একটা জায়গায় দাঁড়িয়েছে যে ম্যাচটা শুধু জেতা। অথচ আজকের হিসাব ছিল শুধুই ১২.১ ওভারের। এর বাইরে আর কিছু ভাবার সুযোগ ছিল না। আমরা যদি ৫০ রানেও অলআউট হত, সেটা সবাই সহজভাবেই নিত। “

“যদি এই ম্যাচ জিততাম, তাহলে বিবেকের কাছে হেরে যেতাম। এ ম্যাচটা আর ১০টা ম্যাচের মতো ছিল না আমাদের জন্য। এটা ছিল ইতিহাস গড়ার সমান। এরপরও অবশ্যই আশা দেখি বা দেখব ইনশাআল্লাহ। হয়তো কোনো একদিন।”

৯ ওভারের শেষেও বাংলাদেশ ৭৫/৫ ছিল। এরপরে লিটন এবং তাওহিদের চারটে বাউন্ডারির পর সমীকরণ দাঁড়ায় ১৯ বলে ৪৩। তারপরেই মাহমুদুল্লাহ-এ সেই কুখ্যাত ডট বল খেলা।

শান্ত পরে জানিয়েছেন, “আমরা প্রাথমিকভাবে জিততে চেয়েছিলাম। যখন আমরা দেখলাম স্কোরবোর্ডে মাত্র ১১৫ টার্গেট। তখন আমরা ১২.১ ওভারের মধ্যেই চেজ করতে চেয়েছিলাম। তবে ব্যাটিং একদম রুখে দাঁড়াতে পারেনি। ভীষণ হতাশার ব্যাপার হয়ে থাকল পুরোটা। আমরা জিততে চেয়েছিলাম। আমাদের সুযোগ হাতের কাছেই ছিল। নিতে পারলাম না।”

বাংলাদেশ ১০৫ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার মঞ্চে অপরাজিত থাকলেন লিটন দাস ৫৪ রানে। আফগানিস্তানও ইতিহাস গড়ে অস্ট্রেলিয়াকে পেরিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল ঐতিহাসিকভাবে।

2024-06-25T13:36:02Z dg43tfdfdgfd