জস্সি ভাইকে কুর্নিশ অর্শদীপের, রোহিত-বুমরায় উচ্ছ্বসিত ক্রিকেট দুনিয়া

যার যেমন পছন্দ। শহরের প্রাণকেন্দ্র টাইমস স্কোয়ার থেকে ব্রডওয়ের দিকে হাঁটুন বা সেন্ট্রাল পার্কের দিকে, মাঝে মাঝেই চোখ টানবে রোডসাইড পাব। যেখানে কোথাও চলতি ইউরোর সাজে সেজেছে শহর। ফ্রান্স বা স্পেনের পতাকার পাশে জ্বলজ্বল করছে পর্তুগাল। কোথাও আবার ইউরো-কোপা হাত-ধরাধরি করে আছে। তা বলে বেসবল ভক্তদের সংখ্যালঘু ভাবার কারণ নেই। বিভিন্ন স্পোর্টস পাব বা কাফেতে চুটিয়ে চলছে বেসবল।

আবার দক্ষিণ এশীয়দের পাড়া জ্যাকসন হাইটসে গেলেই পরপর ভারত-বাংলাদেশ-পাকিস্তান। ব্রঙ্কস অঞ্চলে প্রচুর বাংলাদেশির বাস। এখানেই ক্রিকেট সরঞ্জামের বিখ্যাত দোকান ক্রিকেটজোন, ইউএসএ। মালিক গায়ানার রবি এটারলু। সেখানে আলোচনায় শুধুই ক্রিকেট। রবি কাঁধ ঝাঁকালেন, 'দুবেকে বসিয়ে ইন্ডিয়া কেন যশস্বী জয়সোয়ালকে খেলাচ্ছে না, মাথায় ঢুকছে না।'

তখনও আফগানিস্তান ইতিহাস গড়েনি। ছিটকে যায়নি অস্ট্রেলিয়া। পাক্কা ক্যারিবিয়ান রবি যোগ করেছিলেন, 'মনে রাখবেন, আফগানদের বোলিং কোচ ডোয়েন ব্র্যাভো। ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেট ওর চেয়ে ভালো কেউ চেনে না। রশিদ খানরা যে কোনও টিমকে হারাতে পারে।'

কিংসটাউনে ম্যাচ জেতার পরে কোচ জোনাথন ট্রট আর বোলিং কোচ ব্র্যাভোর উল্লাস দেখে মনে পড়ল রবির মুখটা। অস্ট্রেলিয়ার মতো টিম স্রেফ হাওয়া রশিদ খান-নাভিন উল হক-গুরবাজদের জন্য। এশীয় ক্রিকেটের নিরিখে এই জয়ের তাৎপর্য ঐতিহাসিক। ভারত ছাড়া বিশ্বকাপে এশিয়ার প্রতিনিধি আফগানরাই।

সাধে রশিদ খান বলছেন, 'আমরা বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল খেলছি, এটা দেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে বিশাল অনুপ্রেরণা। এটা স্বপ্নের মতো।' তারুবায় কাল প্রথম সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে থাকবেন চনমনে রশিদ অ্যান্ড কোং। আবার ভারতের সামনে ফের ইংল্যান্ড। দু'বছর আগে অ্যাডিলেডে রোহিতরা ১৬৮ তোলার পরে ১৬ ওভারে ১৭০-০ তুলে টিম ইন্ডিয়ার বোলিংকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলে জিতেছিল ইংল্যান্ড। দুই ওপেনার বাটলার আর অ্যালেক্স হেলসই তুলে দিয়েছিলেন রান।

সেই টিম ইন্ডিয়ার সঙ্গে এবারের টিমের একটাই তফাৎ। সেবার ছিলেন না জশপ্রীত বুমরা। এই বিশ্বকাপে আছেন এবং রোজই কাঁপাচ্ছেন। নিজের বোলিংকে নিয়ে গিয়েছেন একটা অবিশ্বাস্য উচ্চতায়। পাকিস্তান ম্যাচে ঠিক সময়ে রিজওয়ানের উইকেট, অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে একই ভাবে ট্র্যাভিস হেডের উইকেট। গেমচেঞ্জার। স্বয়ং গাভাসকর বলছেন, 'আমার কাছে হেডের উইকেটটাই টার্নিং পয়েন্ট। হেড ফেরার সময়ে ভারতের ফিল্ডারদের মুখগুলো দেখে মনে হল, ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়েছে!'

অজি ম্যাচে ২৯ রান দিয়ে বুমরার নামের পাশে একটা মাত্র উইকেট। ট্র্যাভিস হেড। সেটাই কেন পাঁচ উইকেটের সমান, তার চমৎকার ব্যাখ্যা ৩৭ রানে তিন উইকেট নেওয়া অর্শদীপের। 'আমার উইকেটগুলোর জন্য আসল কৃতিত্ব জস্সি ভাইয়ের। ওর বলে ওভারে তিন-চার রানের বেশি রান হবে না জেনে আমাকে অ্যাটাক করতে যাচ্ছিল অজি ব্যাটাররা। তাতেই উইকেট এসেছে।'

অজি ম্যাচে রোহিতের ৪১ বলে ৯২ ভেঙে দিয়েছে অজস্র রেকর্ড। তা নিয়ে বিন্দুমাত্র আলোড়িত নন হিটম্যান। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের আগে টি-টোয়েন্টি টিম নিয়ে ভাবনাতেই ছিলেন না। অথচ গত একটা বছরে সাদা বলের ক্রিকেটে ব্যাটিং-অ্যাপ্রোচের খোলনলচেটাই বদলে ফেলেছেন। বারবার বলছেন, 'আমি কত রান করলাম, সেঞ্চুরি এল কি না, একেবারে জরুরি নয়। বোলারকে সব সময়ে চাপে রাখাটা স্ট্র্যাটেজি ছিল। মাঠের হাওয়া শুধু নয়, গোটা মাঠটাই ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম।'

ব্যবহারই বটে! তাঁর গোটা ক্রিকেটজীবনে তিন ফর্ম্যাট মিলিয়ে কোনওদিন এক ওভারে এভাবে চার ছক্কা সহ ২৯ রান দিতে হয়নি মিচেল স্টার্ককে। কিন্তু এখনও রোহিতের কাজ শেষ হয়নি। ট্রফি থেকে দুটো ম্যাচ দূরে দাঁড়িয়ে ভারত।

গত ১১ বছরে এ ভাবে অপরাজেয় থেকে সেমিফাইনালে বা ফাইনালে যাওয়ার অসংখ্য উদাহরণ আছে। আছে হোঁচট খেয়ে রক্তাক্ত হওয়ার তিতকুটে ইতিহাস। গায়ানার উইকেট অ্যাডিলেড নয়, রোহিত জানেন। জানেন, এটাই শেষ সুযোগ। ক্যারিবিয়ান আইল্যান্ডে বাটলারের টিম কি অপ্রতিরোধ্য? নাহ, এই ভারতের সামনে একেবারেই না!

এই ধরনের আরও খবর জানতে এই সময়ে আসুন। লেটেস্ট নিউজ, শহরের তাজা খবর, দেশের খবর, ব্যবসার খবর, খেলার আপডেট, দৈনিক রাশিফল এবং লাইফস্টাইলের টিপস জানুন। আর ভিডিয়োর জন্য রয়েছে TimesXP

2024-06-26T07:20:34Z dg43tfdfdgfd